গাজা যুদ্ধের শততম দিনে

গাজায় ইসরাইলের হামলার চার মাস হতে চলল। দীর্ঘ এই সময়ে ইসরাইলের বর্বরতা একটুও কমেনি। কমেনি ইসরাইলের মদদদাতা আমেরিকার অন্যায় সমর্থনও। প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর অনুভূতিহীন নেতারা তাদের অন্ধত্ব থেকে এখনো বেরিয়ে আসেননি। মুসলিম দেশগুলোর নেতারা শুরুতে যতটুকুই কথা খরচ করেছিলেন তাও অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। পত্রিকার পাতার শিরোনাম থেকে ফিলিস্তীন সরতে সরতে এখন আর চোখেই পড়ে না। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমেও আমরা ফিলিস্তিনকে ভুলে দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখ নিয়ে ব্যস্ত। খোদা, আমরা এমন সময়ের সাক্ষ্য হয়েছি যখন আমাদের হাতের চেয়ে মন বাধা পড়েছে ভীরুতার কবলে। খোদা, তুমিই জানো এ ভীরুতা ও জড়তার শেষ কোথায়?

এ দূর বাংলায় বসে গাজার ভাই-বোনদের জন্য ব্যথা-বেদনা আর অশ্রুই সম্বল। একে তো পবিত্র ভূমিতে অকাতরে মুসলিম নারী-শিশুর প্রাণহানী, সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে হাত-পা, শক্তি- সামর্থ্য থাকতেও কিছু করতে না পারা।

গাজা যুদ্ধের শততম দিনে
গাজা যুদ্ধের শততম দিনে


আল্লাহরে কাছে কায়মনোবাক্যে দুআ করি, হে আল্লাহ, আপনি মুসলিম উম্মাহকে সাহায্য করুন। গাজার মুসলিমদের সাহায্য করুন। মুসলিম উম্মাহকে সব ধরনের ফিতনা ও মসীবত থেকে রক্ষা করুন। ঈমানের সম্বল নিয়ে আপনার দরবারে হাজির হওয়ার তাওফীক দান করুন- আমীন।

একশ দিনে গাজা যুদ্ধে আমরা স্বচক্ষে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখলাম । দেখেছি, কে মুমিন, কে কাফের আর কে মুনাফেক!

এই একশ দিনে মুজাহিদরা মহান আল্লাহর কাছে পুরস্কারের আশায় অটুট ধৈর্য, আর বন্দি শত্রুর প্রতি অনুপম আচরণ উপহার দিয়ে বিশ্বের সামনে ইসলামের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তুলে ধরেছেন...!


আমরা দেখেছি, শত বছর ধরে দেয়াল ও সীমানা প্রাচীরের যে প্রতিরোধ শত্রুরা গড়ে তুলেছিল মাত্র একশ দিনে ঈমানী শক্তি কীভাবে তা ভেঙে চুরমার করে দিল!

আমরা আরও দেখেছি, সবদিক থেকে অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায়, মাটির নিচে তৈরি সামান্য অস্ত্র আর ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান প্রতিরক্ষাহীন মুজাহিদদের সামনে কীভাবে ইহুদীদের গর্ব ‘মেরকাভা ট্যাংক' ধুলোয় মিশে গেল, সকল আধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ ইহুদী সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল..... 


শক্তিশালী রাষ্ট্র ও জোটের মনোবল ভেঙে পড়ল !

মাত্র একশ দিনে আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে এত বিশ্বাসঘাতকতা প্রত্যক্ষ করেছি, যা হাজার বছরের জন্য যথেষ্ট !


একশ দিনে কত হাজার মানুষের রক্ত ঝরানো হয়েছে! কত কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে! 

কত হাজারো বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। কত মসজিদ, গির্জা আর আশ্রম গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে!

এমন যেকোনো একটি অপরাধই তো শত্রুর বিরুদ্ধে অস্তিত্ববিনাশী যুদ্ধ ডেকে আনার কথা, কিন্তু কেউ যুদ্ধে নামেনি! হাঁ, কেউ শুধু সীমান্তে মার্চ করেই ক্ষান্ত থেকেছে।

কেউ তো এতটুকুও করেনি!

ইহুদীদের নিষ্ঠুরতা, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর বিশ্বাসঘাতকতা আর পাশ্চাত্যের নীচতা ও নির্লজ্জতাসহ এই একশ দিনেই আল্লাহ আমাদের আরও কত কী দেখিয়ে দিলেন! দেখালেন, সংখ্যাস্বল্পতা সত্ত্বেও ঈমানের শক্তি কত প্ৰবল !

এই একশ দিনে পৃথিবীর বহু স্বাধীনচেতা মানুষ ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন, তলোয়ার ছাড়াও কুরআন নিজেকে রক্ষা করতে পারে! তারা দেখেছেন, কীভাবে অবিশ্বাসীরা কুরআনের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে!

এই একশ দিন বহু যুবক-যুবতীর মাঝে নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেছে; দীর্ঘ নিদ্রা থেকে তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করেছে!

এই একশ দিনের মধ্যেই হাজার হাজার পশ্চিমা মানুষের ঘরে কুরআন জায়গা করে নিয়েছে।

Post a Comment

0 Comments